প্রত্যন্ত অঞ্চলের অল্প কিছু মানুষের মাঝে ঈদের খুশি আমরা খুব স্পেশাল সময় যা পরিবার এবং সাহসী অঞ্চলের মানুষদের জন্য একটি বিশেষ অনুভূতি মাধ্যমে পাঠানোর জন্য নিরবিচ্ছিন্ন চেষ্টা করছি। এই অঞ্চলে আছে অনেক সংখ্যক মানুষ যারা অর্থনৈতিক সমস্যা এবং সামাজিক প্রতিবন্ধকের মধ্যে পড়ে থাকেন। ঈদের আসর দিয়ে আমরা উদ্বোধন করছি এই অঞ্চলের মানুষদের খুশির জন্য কিছু করতে এবং তাদের জীবনধারায় ছোট একটি আনন্দময় মুহূর্ত যুক্ত করতে। এই অবসর সময়ে পরিবারবৃত্তিতে একত্রিত হওয়া, ভালোবাসা এবং ভাগ্যবান হওয়ার সুযোগ পাওয়ার জন্য ঈদ একটি স্পেশাল অনুষ্ঠান। ঈদের সময় আমরা আমাদের সম্পর্ক মাজে ভাগ করে এবং প্রান্তিক ভালোবাসা এবং সহানুভূতির মাধ্যম.
দারিদ্র্য দুর্দশা এদেশের পরতে পরতে জড়িয়ে আছে। রাষ্ট্রীয় ভাবে দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্প নেয়া হলেও তার সুফল সকল স্তরে পৌঁছাতে সক্ষম হয়নি এখনো। এনজিও গুলো এবং ব্যাক্তিগত ভাবে নানান প্রকল্প নিলেও এখনো অসংখ্য মানুষের জন্য বহু কাজ করা বাকি। বৈশ্বিক মহামারীর কবলে পড়ে দেশের অজস্র মানুষের আর্থিক অবস্থা পূর্বের চেয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
গাইবান্ধা এলাকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বরাবরই পিছিয়ে ছিল। সাম্প্রতিক ঈদুল আযহায় শহরাঞ্চলের অনেক মানুষও কুরবানি দিতে পারেননি যারা আগে পারতেন। সুবিধাবঞ্চিত মানুষেরা বছরের এ সময়টার অপেক্ষায় থাকে দু এক বেলা মাংস দিয়ে ভাত খাবে সে আশায়। কুরাবনির মাংসের কম বা বেশি এক তৃতীয়াংশ অসহায়দের জন্য নির্ধারিত থাকে। দরিদ্ররা গ্রাম থেকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে শহরে আসেন মাংস সংগ্রহ করতে। এ বছর তারা অনেকেই খালি হাতে ফিরেছেন। কার থেকে নিবেন যদি কেউ কুরবানিই না দেন।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের অল্প কিছু মানুষের মাঝে ঈদের খুশি আনার জন্য ক্রাউডফান্ডেড চ্যারিটি প্রোগ্রাম লঞ্চ করার কথা ভাবে কিছু নেটিজেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে। তাদের এ উদ্যোগের প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় বিশ্বস্ত কোন এন্টিটিকে খুঁজে পাওয়া যে বা যারা মাঠ পর্যায়ে এর বাস্তবায়ন করবে এবং স্বচ্ছতা সুনিশ্চিত করবে প্রতিটি ধাপে।
চ্যারিটি প্রোগ্রাম নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ শুরু হওয়ার পর তা নজরে আসে MOMODa Foundation এর। MOMODa Foundation এ মহৎ উদ্যোগকে বাস্তবায়নে সাহায্য করার ইচ্ছা জানিয়ে যোগাযোগ করে চ্যারিটির অর্গানাইজারদের সাথে। চ্যারিটি অর্গানাইজাররা MOMODa Foundation এর সক্ষমতা যাচাই করে নিশ্চিত হয় যে এটিই সেই এন্টিটি হতে পারে, যা তাদের প্রকল্প বাস্তবায়নে এই ঈদের ছুটি এবং লকডাউনের মধ্যেও পূর্ণ স্বচ্ছতার সাথে কাজটা সমাধান করে দিবে।
একটি ছোট গ্রামের সবগুলো পরিবারের জন্য একটি গরু সাদাকাহ হিসেবে আল্লাহ তায়ালার দরবারে উৎসর্গ করার জন্য ডোনেশন সংগ্রহ শুরু হয়, শুরু হয় গরুর অনুসন্ধান। সারাদেশে লকডাউন থাকায় সিদ্ধান্ত হয় সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকেই গরু কেনার, এতে আঞ্চলিক অর্থনীতিরও পৃষ্ঠপোষকতা ঘটে।
গাইবান্ধার প্রত্যন্ত চর এলাকার হলদিয়া ইউনিয়ন এর দক্ষিণ দীঘল কান্দি গ্রামে প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। পাশের এলাকা থেকে ৩৭ হাজার টাকায় একটি গাভী কেনা হয় ২৩ তারিখ বিকালে। পরদিন সকালে এলাকাবাসীর অংশগ্রহণের মাধ্যমে জবেহ সম্পন্ন করে দুপুরের মাঝেই ৬৮ কেজি মাংস বিতরণ করা হয় ৩৬টি পরিবারের প্রায় ২০০ জন মানুষের মাঝে।
সততা ও দক্ষতার সাথে পুরো প্রকল্প তত্ত্বাবধান করেন MOMODa Foundation থেকে নিযুক্ত মাসুদুর রহমান, এরিয়া ম্যানেজার। ক্রাউডফান্ডিং এ অংশ নেন মোট ১৬জন নেটিজেন।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,
هَلْ جَزَآءُ الْاِحْسَانِ اِلَّا الْاِحْسَانُ ۚ
‘উত্তম কাজের প্রতিদান উত্তম ছাড়া আর কী হতে পারে?’ (৫৫-৬০)
চ্যারিটি প্রোগ্রামটির সকল ডোনার এর দান আল্লাহ তায়ালা কবুল করে নিন।
আরো বিস্তারিত থাকছে সংযুক্ত ছবি গুলোতে।